নামাজের বাইরে ফরজ

Table of Contents

নামাজের বাইরে ফরজ ৭ টি

নামাজের বাইরে শর্ত। অন্য ভাষার এই শর্ত গুলিকে নামাজের বাইরের ফরজ বলা হয়। যা ব্যতিত নামাজ সঠিক হয় না।

 

১। শরীর পাক হওয়া।(নামাজের বাইরে ফরজ)

 

মাসয়ালা :- নামাজ পড়তে গেলে প্রথমে শরীরকে শরীয়াতের নিয়মানুযায়ী পাক পবিত্র করে নিতে হয়। যথা- যদি কারো গোসল করা ফরজ হয় তাহলে গোসল করতে হবে। আর ওজু করা জরুরী হয় তাহলে ওজু করে নিতে হবে। শরীরে কোন জায়গায় নাপাকি থাকলে ধুয়ে পবিত্র হতে হবে। নাপাকি অবস্থায় নামাজ দুরুস্ত হয় না।

 

মাসয়ালা :- যদি কোন ব্যক্তির নামাজের মধ্যে ওজু নষ্ট হয়ে যায় তাহলে ওজু করে প্রথম হতে নামাজ পড়াই ভালো। কেন না এ বিষয়ে বহু সূক্ষ্ম শর্ত আছে এবং নানা মতভেদ থাকায় এখানে পরিস্কার করে বর্ণনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

২। কাপড় পাক হওয়া।(নামাজের বাইরে ফরজ)

 

মাসয়ালা :- পরিধেয় কাপড় পাক হওয়া জরুরী। যদি কোন ব্যক্তির কাছে এমন কাপড় থাকে যার তিন অংশ নাপাক আর এক অংশ পাক হয় এবং তার কাছে উক্ত কাপড় পাক করার মত পানিও না থাকে তাহলে ঐ কাপড় পরেই নামাজ আদায় করতে হবে। পুনরায় ঐ নামাজ দোহরিয়ে পড়তে হবে না। এই প্রকার কাপড় থাকা সত্ত্বেও উলঙ্গ নামাজ পড়া দুরুস্ত নয়।

 

মাসয়ালা :- যদি তিন অংশের বেশী নাপাক হয় আর এক অংশের কম পাক হয় তাহলে ঐ কাপড় পরে নামাজ পড়া জায়েজ এবং উলঙ্গ নামাজ পড়াও জায়েজ তবে কাপড় পরে নেওয়াই ভালো।

 

মাসয়ালা :- সম্পূর্ণ কাপড় নাপাক হলে, উলঙ্গ নামাজ পড়া হতে উক্ত কাপড় পরে নামাজ পড়াই উত্তম।

 

মাসয়ালা :- যদি কারো কাছে এতটুকু পানি থাকে যে, তা দ্বারা কাপড় পাক করলে ওজু করা যায় না আর ওজু করলে কাপড় পাক করা সম্ভব হয়না। তাহলে ঐ পানি দ্বারা কাপড় পাক করতে হবে এবং ওজুর জন্য তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করতে হবে।

 

৩। জায়গা পাক হওয়া.(নামাজের বাইরে ফরজ)

 

মাসয়ালা :- যে স্থানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া মনস্থ করছেন উক্ত স্থান পাক হওয়া শর্ত বা জরুরী। নচেৎ নামাজ দুরুস্ত হবে না।

 

মাসয়ালা :- নামাজের পাটি যদি এত ছোট হয় যে, তার উপর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়লে সাজদা নাপাক জায়গাতে হয়, তাহলে নামাজ হবে না। সাজদার জায়গাও পাক হতে হবে।

 

মাসয়ালা :- যদি কোন ব্যাধিগ্রস্থ লোকের বিছানা নাপাক হয় এবং নামাজ পড়ার সময় তার সরিয়ে অন্য বিছানা দেওয়া মাত্রই তা নাপাক হয়ে যায় তাহলে ঐ নাপাক বিছানায় নামাজ জায়েজ হবে।

 

মাসয়ালা :- যদি কোন অসুস্থ লোকের বিছানা পরিবর্তন করা অত্যন্ত কষ্টকর হয় তাহলে তার নাপাক বিছানাতেই নামাজ হবে।

 

মাসয়ালা :- যদি সমস্ত জমিন নাপাক অথবা কাদা হয়, আশেপাশে কোথাও শুষ্ক জমিন না পাওয়া যায় তাহলে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে হবে এবং রুকু সাজদা ইশারায় আদায় করতে হবে।

 

৪। সতর ঢাকা(নামাজের বাইরে ফরজ)

 

মাসয়ালা :- পুরুষের নাভিরনিচে হতে হাটু পর্যন্ত ও মহিলাদের মুখ এবং হাতের তালু ও পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত শরীর ঢাকা নামাজের একটি শর্ত যদি এই শর্ত না পাওয়া যায় তাহলে নামাজ দুরুস্ত হবে না।

 

মাসয়ালা :- যদি কোন স্ত্রীলোক খুব পাতলা বা জালিদার কাপড়ের উড়নী ব্যবহার করে নামাজ পড়েন, যে কাপড় দিয়ে অঙ্গ দেখা যায়। তাহলে ঐ নামাজ দুরুস্ত হবে না।

 

মাসয়ালা :- স্ত্রীলোকের পায়ের নলী বা রান অথবা হাতের এক চতুর্থাংশ নামাজের মধ্যে তিনবার সুবহানাল্লাহ পড়ার পরিমান সময় খোলা থাকলে নামাজ হবে না। যদি উক্ত সময়ের আগে ঢেকে ফেলে তাহলে নামাজ হয়ে যাবে।

 

মাসয়ালা :- যে যে অঙ্গ নামাজের মধ্যে ঢাকা ফরজ যদি তার এক চতুর্থাংশ খোলা থাকে তাহলে নামাজ হবে না। যেমন-কানের চতুর্থাংশ, মাথার চতুর্থাংশ ইত্যাদি।

 

মাসয়ালা :- যদি কারও কাছে মোটেও কাপড় না থাকে তাহলে কোন নির্জন স্থানে দাঁড়িয়ে অথবা বসে নামাজ আদায় করতে হবে। তবে বসে আদায় করাই উত্তম। রুকু সাজদা গুলি ইশারা দ্বারা আদায় করবে।

 

৫। কিবলা মুখী হওয়া:-(নামাজের বাইরে ফরজ)

 

মাসয়ালা :- নামাজের সময় চেহারা কিবলার দিকে রাখা কিবলা মুখী হওয়া এবং না হওয়ার বিস্তারীত বায়ান কিবলা বয়ানে বর্ণিত হয়েছে।

 

৬। নিয়াত করা:-(নামাজের বাইরে ফরজ)

 

মাসয়ালা :- মুখে অথবা মনে মনে এই ইচ্ছা করা যে, আমি অমুক ওয়াক্তের এত রাকাত অমুক নামাজ পড়ছি।

 

মাসয়ালা :- নিয়াত মুখে বলা শর্ত নয়। বরং মনে মনে যখন এমন মনস্থ করে নেওয়া হয় যে, আমি অমুক ওয়াক্তের এত রাকাত অমুক নামাজ পড়ছি। এই খেয়াল করার পর আল্লাহু আকবার বললেই নামাজ দুরুস্ত হয়ে যাবে। যে আরবী নিয়াত প্রচলিত আছে মুখে পড়া মুস্তাহাব।

 

মাসয়ালা :- যদি মনস্থ করেন যে আমি জোহরের নামাজ পড়ছি কিন্তু মুখে বেখেয়ালে আসরের নামাজ বার হয়ে গেল, তাতে কোন অসুবিধা নেই। নামাজ হয়ে যাবে।

 

মাসয়ালা :- চার রাকাত মনস্থ করে আর মুখ দিয়ে তিন রাকাত অথবা ছয় রাকাত বার হয়ে যায় তাও নামাজ হয়ে যাবে।

 

মাসয়ালা :- নিয়াত করা নামাজের শর্ত। নিয়াত তকবীর পড়ার পূর্বে করতে হয়। যদি “আল্লাহু” শব্দ ও “আকবার” শব্দ পড়ার পরে নিয়াত করে তাহলে নামাজ দুরুস্ত হবে না।

 

মাসয়ালা :- ইমামের জন্য ইমামতির নিয়াত করা শর্ত নয়। যদি কোন ব্যক্তি একাকি নামাজ পড়েন, হঠাৎ আর এক জন এসে তার পিছনে এক্তেদা করে তাহলে উভয়ের নামাজ দুরুস্ত হয়ে যাবে। তবে মোকতাদীকে এক্তেদার নিয়াত ও ইমামকে ইমামতির নিয়াত মনে মনে করতে হবে। অন্যথায় জামায়াতের ছাওয়াব পাবে না। (নামাজ শিক্ষা- পৃঃ ৮৯ আঃ রুঃ আমিন)

 

মাসয়ালা :- মুক্তাদির জন্য ইমামের এক্তেদার নিয়াত করা শর্ত। যদি মুক্তাদি ইমামের ইক্তেদার নিয়াত না করেন তাহলে মুক্তাদির নামাজ দুরুস্ত হবে না।

 

মাসয়ালা :- মুখে নিয়াত করা মোস্তাহাব। আরবীতে করা শর্ত নয়। বাংলা, ফারসী, উর্দু, হিন্দি অন্য যে কোন ভাষায় মুখে উচ্চারণ করতে পারেন।

 

৭। ওয়াক্ত হওয়া:-(নামাজের বাইরে ফরজ)

 

মাসয়ালা :- নামাজ ছহীহ বা সঠিক হওয়ার জন্য অন্যান্য শর্তের মত ওয়াক্ত হওয়া শর্ত। তাই ওয়াক্ত আসার পূর্বে নামাজ আদায় করলে নামাজ ছহীহ হবে না।

 

মাসয়ালা :- ওয়াক্ত হওয়ার বিশ্বাস জরুরী। যদি ওয়াক্ত সম্বন্ধে সন্দেহ করে যে, ওয়াক্ত হয়েছে কি হয়নি। মনে এমন সন্দেহ থাকলে নামাজ জায়েজ হবে না।

 

মাসয়ালা :- যদি কেউ ওয়াক্ত আসার আগে নামাজ আদায় করেন তাহলে নামাজ হবে না ওয়াক্ত এলে পুনরায় ঐ নামাজ আদায় করতে হবে।

 

মাসয়ালা :- যদি কেউ জোহরের সময় আছে মনে করে জোহরের নামাজ পড়তে থাকেন পরে জানতে পারলেন যে, জোহরের সময় শেষ হয়ে গেছে এবং আসরের ওয়াক্ত এসে গিয়েছে তাহলে তাঁকে জোহরের নামাজ পুনরায় কাজা পড়তে হবে না। বরং যে নামাজ ইতি পূর্বে তিনি পড়লেন তাই কাজা রূপে গণ্য হবে।

নামাজের ভিতরে ফরজ কি? বিস্তারিত মাসয়ালা

নামাজের রুক্স অর্থাৎ যার দ্বারা নামাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। যাকে অন্য ভাষায় নামাজের ভিতরে ফরজ বলা হয়। এই রুক্স বা নামাজের ভিতরে ফরজ সাতটি অনেকে নামাজের রুক্স ছয়টি বর্ণনা করেছেন।

১। তকবীরে তাহরিমা :-(নামাজের ভিতরে ফরজ) 

মাসয়ালা :- নিয়েত করার পর পর “আল্লাহু আকবার” বললে নামাজে দাখিল বা প্রবেশ হয়ে যায়।

মাসয়ালা :- দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার জন্য দাঁড়িয়ে তকবীর বলা ফরজ। অতএব যদি বসে তকবীর তাহরিমা বলে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে নামাজে দাখিল হবে না।

মাসয়ালা :- যদি কেউ ইমাম কে রুকুতে পান এবং তকবীর বলতে বলতে রুকুতে যান, তাকবীরের শেষ অক্ষরটি এমন অবস্থায় উচ্চারণ হয় যে সেখান থেকে হাত লম্বা করলে হাঁটু ছোওয়া যায়, তাহলে নামাজ জায়েজ হবে না।

মাসয়ালা :- যদি কেউ বসে নামাজ পড়ার ইচ্ছা করেন তাহলে বসে তকবীর পড়লে দুরুস্ত হবে

মাসয়ালা :- মুক্তাদি ইমামের আগে তকবীর বললে নামাজ জায়েজ হবে না। এমন কি যদি ইমামের সহিত আল্লাহু শব্দটি বলনে কিন্তু আকবার শব্দটি ইমামের আগে শেষ হলে নামাজ জায়েজ হবে না।

২ কিয়াম করা অর্থাৎ দাঁড়ানো: –(নামাজের ভিতরে ফরজ)

মাসয়ালা :- নামাজের মধ্যে দাঁড়নো একটি ফরজ। অতএব ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও না দাঁড়িয়ে বসে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।

মাসয়ালা :- কিয়ামের পূর্ণাঙ্গ নিয়ম হল তীরের ন্যায় সোজা দাঁড়ানো। তবে যদি কেউ এমন দাঁড়ায় যে, ঐ অবস্থাতে হাত লম্বা করলে হাঁটু পর্যন্ত হাত না পৌঁছায় তাও জায়েজ হবে।

মাসয়ালা :- যত টুকু কেরাত করা ফরজ ততটুকু দাঁড়ানো ফরজ আর যত টুকু কেরাত করা ওয়াজিব ততটুকু দাঁড়ানো ওয়াজিব। অনুরূপভাবে যতটুকু কেরাত করা সুন্নাত ও মোস্তাহাব ততটুকু দাঁড়ানো সুন্নাত এবং মুস্তাহাব।

মাসয়ালা :- গ্রামে গাঁয়ে দেখা যায় স্ত্রীলোকেরা বসে নামাজ পড়েন। কারো কারো এমন ভ্রান্ত ধারণাও জন্মে গেছে যে, বোধ হয় মেয়েদের বসে নামাজ পড়তে হয়। কিন্তু তা একে বারে নয়। ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বসে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না। চাই পুরুষ হন বা স্ত্রীলোক হন।

৩। কেরায়াত করা:-(নামাজের ভিতরে ফরজ)

মাসয়ালা :- নামাজে কুরআন শরীফ পড়া একটা ফরজ। তাই যদি কেউ নামাজের সমস্ত রুক্ আদায় করেন কিন্তু যদি কুরআন শরীফ না পাঠ করেন নামাজ জায়েজ হবে না।

মাসয়ালা :- নামাজের মধ্যে কুরআন শরীফ দুই রকম ভাবে পড়া হয়। জেহরী অর্থাৎ জোরে এবং সিরি অর্থাৎ চুপেচুপে।

মাসয়ালা :- যদি নামাজ জেহরী হয়, তাহলে তা এমন হতে হবে যে প্রত্যেকটি অক্ষর তার মাখরাজ হতে এমন ভাবে উচ্চারণ হয়, যে এক অক্ষর অন্য অক্ষর হতে পৃথক শোনা যায়। আর যদি সিরি কেরাত হয় তাহলে যদি অক্ষর গুলি শুদ্ধ উচ্চারণ করা হয় তাহলে এমন রূপে পড়তে হবে যেন নিজে শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু যদি এমন আস্তে পড়া হয় যে নিজেও শুনতে না পাওয়া যায় তাহলে নামাজ জায়েজ হবে না। কিন্তু যদি কোন কারণ বশত না শোনা যায় যেমন অন্য আওয়াজের কারণে অথবা বধির হওয়ার কারণে না শুনতে পায় তাহলে জায়েজ হবে।

মাসয়ালা :- ফরজ নামাজের প্রথম দু রাকাত এবং বেত্র ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতে কেরাত করা ফরজ।

মাসয়ালা :- নামাজের এক রাকাতে একটি বড় আয়াত অথবা ছোট তিন আয়াত পড়া ফরজ।

মাসয়ালা :- মুক্তাদীর জন্য নামাজের মধ্যে কোন আয়াত অথবা সুরা ফাতেহা পড়া জায়েজ নয়। বরং ইমাম যা পড়েন তা শ্রবণ করা ওয়াজিব।

মাসয়ালা :- যদি কেউ একই সুরা দু-রাকাতে পাঠ করেন, তাহলে ফরজ নামাজ হলে মাকরূহ তানজিহী হবে। আর নফল নামাজ হলে বিনা কারাহাতে জায়েজ হবে।

মাসয়ালা :- একই রাকাতে দুটা সুরা পাঠ করা, যদি পর পর দুটা সুরা হয় তাহলে তা খেলাফে আওলা হবে আর যদি মাঝে মাঝে এক বা একাধিক সুরা বাদ দিয়ে পড়েন তাহলে মাকরূহ হবে। এই হুকুম ফরজ নামাজের, যদি নফল নামাজ হয় তাহলে মাকরূহ হবে না।

৪। রুকু করাঃ-(নামাজের ভিতরে ফরজ)

মাসয়ালাঃ- নামাজের মধ্যে রুকু করা নামাজের একটি রুক্স বা নামাজের একটা ফরজ যদি কেউ নামাজের সমস্ত রুকন আদায় করেন কিন্তু যদি রুকু না করেন তাহলে নামাজ দুরুস্ত হবে না।

মাসয়ালা :- রুকু করার সঠিক নিয়ম এই রূপ যে রুকুতে গিয়ে পিঠ এমন ভাবে সমান করতে হবে, যদি তার পিঠের উপর একটি পানি ভর্তি পিয়ালা রেখে দেওয়া হয় তাহলে ঐ পিয়ালার পানি যেন না পড়ে। এবং রুকুর নিম্ন পর্যায়ের নিয়ম এরূপ যে, মাথা কমপক্ষে এতটা ঝোকাতে হবে, সেখান থেকে যদি হাত লম্বা করেন তাহলে হাত যেন হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যদি কেউ এর থেকে কম নিচু হয় তাহলে রুকু আদায় হবে না।

মাসয়ালা :- যদি কেউ বসে নামাজ পড়েন, তাহলে এতটা ঝুকতে হবে যেন কপাল হাঁটু সমান হয়ে যায়।

মাসয়ালা :- রুকুতে নামাজির নজর পায়ের পাতার দিকে থাকবে।

৫। সাজদা করা:-(নামাজের ভিতরে ফরজ)

মাসয়ালা :- সাজদা করা নামাজের একটি রুকন বা ফরজ। যদি কেউ নামাজে সাজদা না করে তাহলে নামাজ হবে না।

মাসয়ালা :- সাজদার আভিধানিক অর্থ হল, কপাল জামিনের উপর রাখা। শরীয়াতের ভাষায় সাজদা বলা হয় কপাল এবং পায়ের আঙুলের তলা জমিনের উপর রাখা।

মাসয়ালা :- যদি কেউ সাজদায় কপাল রাখেন কিন্তু দুটা পাই তিন তসবীহের বেশী সময় জমিন ছাড়া উপরে থাকে তাহলে সাজদা হবে না। এমন কি যদি কেবল পায়ের আঙুলের নোখ জমিনের সঙ্গে লেগে থাকে তাও সাজদা হবে না অর্থাৎ নামাজ বাতিল হবে এবং উক্ত নামাজ দোহরাতে হবে।

মাসয়ালা :- সাজদার মধ্যে যদি কেউ কেবল কপাল রাখেন নাক না রাখেন তাও সাজদা দুরুস্ত হবে যাবে। কিন্তু যদি কেবল নাক রাখেন কপাল না রাখেন তাহলে সাজদা হবে না। যদি অসুবিধার কারণে কপাল না রাখতে পারেন তাহলে নাকের শক্ত হাড় মাটিতে রাখতে হবে। নচেৎ সাজদা আদায় হবে না।

মাসয়ালা :- যদি নরম গদি বা তুলার কোন বস্তুর উপর নামাজ পড়েন তাহলে সাজদা করার সময় খুব দাবাতে হবে। এমন দাবাতে হবে, যেন তার থেকে বেশি দাবানো আর সম্ভব না হয়। যদি হালকা ভাবে কপাল রেখে দেওয়া হয়, তাহলে সাজদা হবে না।

মাসয়ালা :- যদি কোন অসুবিধার কারণে সাজদা করা সম্ভব না হয় তাহলে ইশারা দ্বারা সাজদা করতে হবে।

৬। শেষ বৈঠক করা:-(নামাজের ভিতরে ফরজ)

মাসয়ালা :- নামাজের ভিতর শেষ বৈঠক করা ফরজ যদি নামাজের

সমস্ত রুকন আদায় করা হয় কিন্তু শেষ বৈঠক না করা হয় তাহলে নামাজ হবে না

মাসয়ালা :- নামাজের ভিতর শেষ বৈঠক এতক্ষণ করতে হবে, যার মধ্যে “আত্তাহিইয়াতু মুহাম্মাদান আবদুহু অরসুলুহু” পর্যন্ত পড়া সম্ভব হয়। এর থেকে কম সময় বসলে শেষ বৈঠক আদায় হবে না।

৭। শেষ বৈঠকের পর সালাম ফিরানো:-(নামাজের ভিতরে ফরজ)

মাসয়ালা :- শেষ বৈঠকের পর সালাম ফিরানো ফরজ। যদি কেউ সমস্ত রুকন আদায় করেন এবং এই কাজটি না করেন তাহলে নামাজ হবে না।

মাসয়ালা :- এই রুকনের ফরজ এতটুকু যে নিজ কার্য্য দ্বারা নামাজ হতে বাইরে আসা।

মাসয়ালা :- যদি কেউ আসসালামু আলাইকুম অরহমাতুল্লাহ না বলে, অন্য কথা বলে নামাজের বাইরে আসেন তাও তার এই রুক্স আদায় হয়ে যাবে। যদিও তাঁর নামাজের একটি ওয়াজেব ছেড়ে যাওয়ার কারেণ নামাজ পুনরায় পড়া ওয়াজিব।

মাসয়ালা :- নামাজ থেকে বার হওয়ার জন্য আসসালাম শব্দ ব্যবহার করা ওয়াজিব। ফরজ বা কোন রুকন নয়।

মাসয়ালা :- “আসসালামু” শব্দটুকু বলা ওয়াজিব কিন্তু “আলাইকুম” শব্দ বলা ওয়াজিব নয়।

মাসয়ালা :- সালাম শব্দের পরিবর্তে যদি কেউ এমন কথা বা কাজ করেন যা করলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায় তাও এই রুকন আদায় হয়ে যাবে।

মাসয়ালা :- নামাজের কোন ফরজ ছেড়ে গেলে বা ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দিলে নামাজ হবে না। উক্ত নামাজ পুনরায় পড়তে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top