কেয়ামতের আলামত প্রধান 10 টা কী কী ?

কেয়ামতের আলামত প্রধান 10 টা কী কী ?

কেয়ামতের আলামত

দাজ্জাল বার‬‎ হওয়া, দাব্বাতুল আরদ্ব বার হওয়া, ইয়াজুজ-মাজুজ বার হওয়া, হজরত ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে অবতরণ হওয়া, পশ্চিম দিক হতে সূর্য্য উদিত হওয়া, হজরত হোজাইফা ইবনে উসাইদ গিফারী (রাঃ) বলেন একবার হুজুর (সঃ) আমাদের কাছে আসেন। আমরা তখন আলোচনা করছিলাম। হুজুর (সঃ) জিজ্ঞাসা করলেন তোমরা কি আলোচনা করছ? আমরা বললাম কেয়ামতের কথা। তিনি বললেন 

কেয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত দশটি চিহ্ন প্রকাশ না পাবে। তিনি বর্ণনা করেন।

কেয়ামতের আলামত 

 ( (১) ধোওয়াঁ (২) দাজ্জাল (৩) দাব্বাতুল আরদ্ব (৪) পশ্চিম দিকে সূর্য্য উদয় (৫) হজরত ঈসা আঃ) ইবনে মরিয়াম এর অবতরণ (৬) ইয়াজুজ মাজুজ (৭) তিনটি ভু-কম্পন পূর্বাঞ্চলের ভূ-কম্পন (৮) পশ্চিমাঞ্চলের ভূ-কম্পন (৯) জাজীরাতুল আরবের ভূ-কম্পন। (১০) তাদের মধ্যে অপর একটি হল ইয়ামান প্রদেশ হতে আগুন বার হওয়া যা মানুষদের একত্রিত হওয়ার স্থানে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে।

কেয়ামতের আলামত সত্য। মিথ্যা ধারনা করা কঠিন গোনাহ।

কেয়ামতের আলামত অবশ্যই প্রকাশ হবে। ইমাম মেহেদী (আঃ) আসবেন এবং ন্যায়ের সাথে বাদশাহী করবেন। কানা দাজ্জাল বের হবে ও পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করবে। তাকে হত্যা করার জন্য হজরত ঈসা (আঃ) আসমান থেকে নেমে আসবেন এবং তাকে হত্যা করবেন।

কিয়ামতের সমস্ত আলামত পূর্ণ হলে হজরত ইস্রাফিল (আঃ) আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে সিঙ্গায় ফুক দেবেন। তার পর সমস্ত পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।

of 1 المُجْتَهِدُ قَدْ يُخْطِئُ وَقَدْ يُصِيبُ‎ মাসয়ালা মন্থন কারী-মাসয়ালা নির্ণয়ে কখনো ত্রুটি হয় আবার কখনো সঠিক হয়।কেয়ামতের আলামত দেখবেন,।

‎‫0919 وَرُسُلُ الْبَشَرِ أَفْضَلُ مِنْ رُّسُلِ الْمَلَائِكَةِ‬‎

ফেরেশাদের রসুলগণ অপেক্ষা উত্তম, ফেরেস্তাদের রসুলগণ সাধারণ মানুষ অপেক্ষা উত্তম, এবং সাধারণ ফেরেস্তা অপেক্ষা উত্তম।

আল্লাহ তায়ালা নূর দ্বারা ফেরো সৃষ্টি করেছেন। তাঁরা আমাদের নজরের আড়ালে। তাদের নারী পুরুষ নেই। পানাহার, নিদ্রা, কাম ইত্যাদি নেই।কেয়ামতের আলামত।

‎‫وَلَا يَصِلُ الْعَبْدُ مَا دَامَ عَاقِلًا بَالِغَاً إِلَى حَيْثُ يَسْقُطُ عَنْهُ الْآمُرُ وَالنَّهَى‬‎

অর্থাৎ বান্দা জ্ঞান প্রাপ্ত ও বয়স প্রাপ্ত অবস্থায় কখন ও এই পর্যায়ে পৌঁছায় না যে তার উপর থেকে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ রহিত হয়ে যায়।কেয়ামতের আলামত 

যেমন ইবাহিয়্যা দলের মতবাদ যে বান্দা যখন কলবের সাফাই ও মহব্বতের শেষস্তরে পৌঁছে যায় তখন তার উপর থেকে আল্লাহর আদেশ- নিষেধ রহিতহয়ে যায়। এই দলের মধ্যে কারো কারো মত যে তার উপর থেকে জাহিরী এবাদাত ও রহিত হয়ে যায় এবং তার এবাদাত খোদা তায়ালার ফিকিরই (ধ্যান) যথেষ্ট কিন্তু এ মতবাদ পথভ্রষ্টতা ও কুফরী মতবাদ।কেয়ামতের আলামত। 

‎‫وَاسْتِحْلَالُ الْمَعْصِيَةِ كُفَرُ‬‎ ছগীরা বা কবীরা গোনাহকে হালাল মনে করা কুফরী।

‎‫ال o all in on وَالْإِسْتِهَانَهُ بِهَا كُفْرٌ‬‎ বা কবীরা গোনাহ কে তুচ্ছ মনে করা কুফরী।

‎‫وَالْإِسْتِهْزَاءُ عَلَى الشَّرِيعَةِ كُفْرٌ‬‎ ও কুফরী।

‎‫وَالْيَأْسُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى كُفْرٌ‬‎ থেকে নিরাশ হওয়া কুফরী। যেহেতু আল্লাহ পাক কুরআনশরীফে বলেছেন “আল্লাহপাকের রহমত থেকে কাফের ব্যতিত কেউ নিরাশ হয়না।”

وَالْآمُنُ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى كُفْرٌ‎ শাস্তি থেকে নির্ভয় হওয়া কুফরী। কেন না ধ্বংস প্রাপ্ত জাতি ব্যতীত আল্লাহপাকের শাস্তি হতে নির্ভয় হয়না।

e sa وَتَصْدِيقُ الْكَاهِنِ يُخْبِرُهُ عَنِ الْغَيْبِ كُفْرٌ‎

গায়েবী খবর বিশ্বাস করা কুফরী যেমন রসুলে পাক (সঃ) বলেছেন-যে ব্যক্তি গনকের নিকট গেল এবং তার কথা বিশ্বাস করল-সে মহম্মদ (সঃ) এর উপর যাকিছু নাজিল হয়েছে তা অস্বীকার করল।

গনক বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে যিনি আগামীতে জমীন-আসমানে যা কিছু হবে বলে দেন এবং গোপন তথ্য জানার দাবী রাখেন। আরবদেশে গনকেরা সমস্ত বিষয় জানার দাবীদার ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন যে জ্বিন তার তাবে বা বশ হয়ে থাকে। ঐ জ্বীন তাকে গায়েবের খবর বলে দিয়ে যায়। তাদের মধ্যে অনেকের ধারনা ছিল যে তাকে এমন বুদ্ধিমত্তা দেওয়া হয়েছে যার দ্বারা সে সবকিছু উপলব্ধি করতে পারে বা বুঝতে পারে।

ইলমে গায়েব এমন একটি বিষয় যা আল্লাহ পাকের জন্য খাস, এতে বান্দার কোন অধিকার নেই। তবে আল্লাহপাক যদি কোন রসুল, নবী, ওলী বা যাঁদের উপর তিনি সন্তুষ্ট তাঁদেরকে কিছু জানিয়ে দেন সেটা স্বতন্ত্র ব্যাপার। যেমন মোজেজা, ইলহাম, কারামত ইত্যাদি।

‎‫- 1 وَاللهُ تَعَالَى يُجِيبُ الدَّعْوَاتِ وَيَقْضِي الْحَاجَاتِ‬‎

আল্লাহ তায়ালা সমূহ দোয়া কবুল করে থাকেন এবং বান্দার সমূহ প্রয়োজন পূর্ণ করেন। যেমন আল্লাহ পাক বলেছেন “তোমরা আমার কাছে দোয়া চাও আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো”। আরও যেমন আল্লাহপাকের রসুল (সঃ) বলেছেন “বান্দার দোয়া ঐ সময় পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ না সে গোনাহের কাজের জন্য এবং আত্মীয়তা বিচ্ছেদের জন্য ও দোয়ার সময় ইস্তিজাল না করে। ইস্তিজাল বলা হয় দোয়া কারী বলে “কত দোয়া করলাম কিন্তু কবুল হল না” একথা বলে আফসোস করে এবং আল্লাহ পাকের রহমত হতে নিরাশ হয়ে দোয়া বন্ধ করে দেয়। তবে জেনে রাখা উচিৎ যে, দোয়া কবুলিয়াতের বিষয়ে উত্তম পন্থা হলো-সিদকে নিয়াত, খুলুছে নিয়াত ও হুজুরে কলবের সঙ্গে দোয়া করা। যেহেতু আল্লাহ পাকের রসুল (সঃ) বলেছেন “তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া চাও। এটাও জেনে রাখা দরকার যে আল্লাহ পাক অন্য মনস্ক গাফেল কলবের দোয়া কবুল করেন না।

‎‫وَفِي دُعَاءِ الْأَحْيَاءِ لِلَّامُوَاتِ وَصَدَقَتِهِمْ عَنْهُمُ نَفْعٌ لَّهُمُ‬‎

অর্থাৎ জীবিত ব্যক্তি গণের দোয়া ও তাদের দান খয়রাত মৃত ব্যক্তি গণের জন্য উপকারী। আল্লাহ পাকের রসুল (সঃ) বলেছেন, কোন

মুসলমান মাইয়েতের জানাজার নামাজে ১০০ জন ব্যক্তি শরীক হয়ে মাইয়েতের জন্য দোয়া করলে আল্লাহ পাক তাদের দোয়া কবুল করেন।

হযরত সায়াদ ইবনে উবাদা (রঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন- হে আল্লাহর রসুল সায়াদের মা ইন্তেকাল করেছেন-এমতাবস্থায় কোন ছাদকা উত্তম হবে রসুল পাক (সঃ) বলেন পানির ছাদকা। সুতারাং সায়াদ ইবনে উবাদা একটি কুয়া খুঁড়ে দেন এবং বলেন এটা সায়াদের মায়ের জন্য। আল্লাহ পাকের রসুল (সঃ) আরো বলেছেন-দোয়া বালা মছিবত দূর করে এবং ছাদকা আল্লাহ পাকের গযব দূর করে। আল্লাহ পাকের রসুল (সঃ) আরো বলেন যে, যখন কোন আলেমে হাক্কানীও পরহেজগার তালিবে ইলম কোন গ্রামের উপর দিয়ে হেঁটে যায় আল্লাহ তায়ালা ঐ গ্রামের কবর বাসীর ৪০ দিনের আজাব দূর করে দেন। এবিষয়ে অসংখ্য হাদিছ শরীফ আছে।

‎‫وَرُؤيَةُ اللَّهِ تَعَالَى جَائِزَةٌ فِي الْعَقْلِ وَاجِبَةٌ بِالنَّقْلِ‬‎

অর্থাৎ-আল্লাহপাকের দীদার আক্স মোতাবেক জায়েজ এবং নকল (অর্থাৎ কুরআনশরীফ, হাদিছ শরীফের দলিল) মোতাবেক ওয়াজিব।

যেমন আল্লাহপাক বলেছেন “সেদিন কিছু মুখমণ্ডল তাদের রবের দিকে তাকিয়ে থাকবে ও কিছু মুখমণ্ডল খুশী প্রকাশ করবে। (২৯ পারা, সুরা কিয়ামাহ) আল্লাহ পাকের রসুল (সঃ) বলেছেন তোমরা তোমাদের রবকে এমনই দেখতে পাবে যেমন পূর্ণিমার রাতে চাঁদকে দেখতে পাও। (সহী বুখারী শরীফ) হাদিছ শরীফটি মশহুর-২১ জন আকাবের ছাহাবা (রাঃ) বর্ণনা করেছেনএবং এবিষয়ে উম্মতের ইজমা যে আখেরাতে আল্লাহ পাকের দীদার হবে। যত হাদিছ শরীফ এবিষয় এসেছে সব তার জাহেরীর উপর।

‎‫وَالشَّفَاعَةُ ثَابِتَةٌ لِلرُّسُلِ وَالْأَخْيَارِ فِي حَقِّ أَهْلِ الْكَبَائِرِ‬‎

গোনাহে কাবীরা কারীদের জন্য আল্লাহপাকের রসুলগণ ও মনোনীত ব্যক্তিগণ সুপারিশ বা শাফায়াত করতে পারবেন-যা হাদিছে মশহুর দ্বারা প্রমানিত। যেমন আল্লাহ পাকের রসুল (সঃ) বলেছেন-আমার শাফায়াত আমার উম্মতের কাবীরা গোনাহ কারীদের জন্য হবে। এই হাদিছ শরীফ, মশহুর হাদিছ শরীফ, বরং শাফায়াতের ব্যাপারে সমস্ত হাদিছ শরীফ তাওয়াতুরে মা’নবীর দর্জায় পৌঁছে গেছে।

‎‫وَأَفَضَلُ الْأَنْبِيَاءِ مُحَمَّدٌ ﷺ অর্থাৎ-সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ(‬‎

যেমন-আল্লাহপাক বলেছেন তোমরা এমন শ্রেষ্ঠ উম্মত যাঁদের কে মানব জাতির কল্যানের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, উম্মতের শ্রেষ্ঠ হওয়া তাঁদের দ্বীন ধর্মের কামেল হওয়ার দিক দিয়ে বলা হয়েছে এবং এ বিষয়টি তাদের ঐ নবীর কামেল হওয়ার দলিল যে নবীকে তারা অনুসরণ করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top