জাকাত কাকে বলে ?

জাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ পবিত্র করণ। সাহেবে নেসাব নয় এমন ব্যক্তি কে সাহেবে নেসাব হয় না এমন পরিমান মালের মালিক করে দেওয়া কে শরীয়তের পরিভাষায় জাকাত বলা হয়। জাকাত আদায় করার ফলে সাহেবে নেসাবের অবশিষ্ট মাল পাক হয়ে যায়। অতঃপর আল্লাহ পাক তার মালে বরকত দান করেন এবং তার মালের দ্বারা তাকে আল্লাহ পাক দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা দান করেন।

ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে একটি স্তম্ভ জাকাত। জাকাত অস্বীকার করলে তিনি কাফের হবেন এবং আদায় না করলে তিনি ফাসেক হবেন। কুরআন পাকের মধ্যে বহু জায়গায় আল্লাহপাক জাকাত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। যারা জাকাত আদায় করবে না তাদের সম্বন্ধে কুরআন পাকে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে কুরআন শরীফের পারা নং ১০, সুরা “তওবা” ৩৪ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন-

আর যারা সোনা-রূপা সংগ্রহ করে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ করেনা, হে মুহাম্মাদ (সঃ) তুমি তাদের কে যন্ত্রনা দায়ক শাস্তির সংবাদ শুনিয়ে দাও।

তিরমিজি শরীফের একটি হাদীসে হজরত আনাস (রাঃ) বলেন সাদকাহ আল্লাহ পাকের গজবকে ঠাণ্ডা করে আর অপঘাত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে।

আকিল, বালিগ, আজাদ, মুসলমান সাহেবে নেসাবের উপর জাকাত দেওয়া ফরজ। জাকাত আদায় করলে ধন সম্পদে বরকত হয় অনাদায়ে সম্পূর্ণ মাল নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে।

সাহেবে নেসাব:- সাংসারিক আবশ্যকীয় খরচ পত্র এবং নিত্য প্রয়োজনীয় ও নিত্য ব্যবহার্য্য জিনিস ছাড়া যদি কারো কাছে ৫২ই তোলা রূপা অথবা ৭ই তোলা সোনা বা তার মূল্য পরিমান টাকা বা অলঙ্কার পত্র, কিম্বা কারবারের মাল মজুত থাকে এবং তার উপর ইসলামী বার মাসের পূর্ণ ১ বৎসর

অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে তার উপর ৪০ ভাগের একভাগ বা তার মূল্য শতকরা ২০ টাকা হিসাবে ইবাদাতের নিয়াতে গরীব কে প্রদান করা কে জাকাত বলা হয় এবং উক্ত পরিমান মালের মালিক কে শরীয়াতের পরিভাষায়

◆ যাদের কে জাকাত দেওয়া যায়না :-

(১) কাফির অমুসলমান,

 (২) সাহেবে নেসাব ধনী,

 (৩) সাইয়েদ বংশীয়কে

 (৪) সরাসরি ইমাম বা ওস্তাদের বেতন 

(৫) মক্তব, মসজিদ ইত্যাদির গৃহ নির্মানে

 (৬) নিজ পিতা মাতাকে 

(৭) সন্তান কে 

(৮) মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে।

যে সমস্ত জিনিসের উপর জাকাত ফরজ হয়:-

(১) সোনা রূপা বা

 

সোনা রূপার অলঙ্কার, টাকা পয়সা। 

(২) উট, গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল। যদি ছয় মাস বা ততধিক সময় নিস্কর মাঠে অথবা জঙ্গলে চরে খায়। (৩) কারবার বা ব্যবসা বাণিজ্যের মাল।

 

জাকাতের জন্য নিয়াত শর্ত, নিয়াত ছাড়া জাকাত দিলে জাকাত আদায় হবে না।

 

জাকাত আদায় করার ফজিলত

 

জাকাত আদায় করলে আল্লাহ পাক আদায় কারীর দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবি বা সফলতা নসীব করেন। আখেরাতে তার সওয়াব সমূহ কে দশগুন বাড়িয়ে দেন।

 

আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে জাকাত আদায় কারী সম্পর্কে বলেন- সুরা বাকারা আয়াত-২

 

‎‫هُدًى لِلْمُتَّقِينَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلوةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ (بقره)‬‎

 

অর্থাৎঃ- মুত্তাকিনদের জন্য হেদায়েত, যারা গায়েবের উপরে ইমান আনে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি যা তাদের কে রিজিক দান করেছি, তা থেকে আমার রাস্তায় ব্যয় করে।

 

৩ পারা, সুরা বাকারা ২৬১ আয়াতে বলেন

 

‎‫مَثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ‬‎ ‎‫سَنَابِلٍ مَنَبِلٍ مَبَّهُلَ فِي كُلِّ سُنَبِلُةُ اعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ (بقرة)‬‎

 

অর্থ:- যারা আল্লাহ পাকের রাস্তায় মাল ব্যয় করে, তাদের মালের উদাহরণ, ঐ দানার মত যা সাতটা শিশ তুলেছে এবং প্রত্যেকটা শিশে শত দানা বিদ্যমান। আল্লাহ যাকে চান, তাকে অনেক বাড়িয়ে দেন।

 

৩ পারা, সুরা বাকারা, ২৭৪ আয়াতে বলেন-

 

‎‫الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَّ عَلَانِيَةً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ‬‎

 

‎‫رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ (بقرة)‬‎

 

অর্থ:- যারা আল্লাহ পাকের রাস্তায় রাত-দিন, প্রকাশ্যে ও গোপনে মাল ব্যয় করে, তাদের প্রভুর কাছে তাদের প্রতিদান বিদ্যমান। কিয়ামতের ময়দানে তাদের কোন ভয় ও দুঃখ থাকবে না।

 

১৮ পারা, সুরা মুমিনুন, ১ম আয়াতে বলেন-

 

‎‫قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ وَالَّذِينَ‬‎

 

‎‫هُم لِلزَّكوة فَاعِلُونَ (مؤمنون) آيت على‬‎

 

অর্থ:- নিঃসন্দেহে সফল ঐ সমস্ত ঈমানদারগণ বা যারা আপন নামাজে বিনয়ী ভাব রাখে এবং যারা আপন মাল থেকে জাকাত প্রদান করে।

 

৬ পারা, সুরা মায়েদা, ১২ আয়াতে বলেন-

 

‎‫وَقَالَ اللَّهُ إِنِّي مَعَكُمْ لَئِنْ أَقَمْتُمُ الصَّلوةَ وَآتَيْتُمُ الزَّكوة (مائدة)‬‎

 

অর্থ:- আল্লাহ পাক বলেন, যদি তোমরা নামাজ কায়েম কর ও জাকাত প্রদান কর, তাহলে আমি তোমাদের সাথে আছি।

 

৬ পারা, সুরা নিসা, ১৬২ আয়াতে বলেন-

 

‎‫وَالْمُقِيمِينَ الصَّلوةَ وَ المُؤتُونَ الزَّكَوةَ وَ المُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أُولَئِكَ‬‎ ‎‫سَنُؤْتِيهِمْ نَجْرًا عَجْرًا سَنُؤْتِيهِمْ أَجْرَاءً‬‎

 

অর্থ :- নামাজ কায়েমকারীগণ, জাকাত আদায় কারীগণ, আল্লাহ পাকের উপর ও কিয়ামতের দিনের উপর বিশ্বাস স্থাপন কারীগণ, এই সমস্ত লোকদের কেই আল্লাহ পাক অতি শিঘ্রই উত্তম প্রতিদান দান করবেন।

জাকাত আদায়কারী সম্পর্কে রসুলে পাক (সঃ) এঁর হাদিস শরীফ

 

আল্লাহ পাক যেমন কুরআন শরীফে জাকাত আদায় কারীর মরতবা ও সম্মান বর্ণনা করেছেন, তেমন রসুলে পাক (সঃ) ও হাদিস শরীফে তার মরতবার বর্ণনা দিয়েছেন। যথা-

 

১- হজরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণনা করেন, হুজুর পাক (সঃ) এরশাদ করেছেন, সকাল বেলা দুজন ফেরেস্তা আসমান থেকে অবতরণ করেন এবং তাদের মধ্যে একজন দোয়া করেন, হে আল্লাহ জাকাত আদায় কারীর মালের প্রতিদান দাও! অপরজন বলতে থাকেন, হে আল্লাহ! কৃপনকে ধ্বংস করে দাও। (বোখারী শরীফ)

 

‎‫عَنْ أَبِي هُرَيْرَهُ ۖ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ السَّخِيُّ قَرِيبٌ مِّنَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْجَنَّةِ‬‎ ‎‫قَرِيبٌ مِّنَ الْجَنَّةِ قَرِيبٌ مِّنَ النَّاسِ بِعِرِيُدٌ مِّنَ النَّاسِ بِعِيْدٌ نَ اللَّهِ بَعِيدٌ مِّنَ‬‎

 

‎‫الْجَنَّةِ بَعِيدٌ مِنَ النَّاسِ قَرِيبٌ مِّنَ النَّارِ। ترمذی শরীফ ج:২, স:১৭‬‎

 

২- হজরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হুজুর (সঃ) থেকে বর্ণনা করেন, দানশীল বা জাকাত আদায় কারী ব্যক্তি আল্লাহ পাকের নিকটে থাকবে। জান্নাতের খুব কাছের, মানুষেরও খুব কাছের এবং জাহান্নাম হতে দুরে থাকবে। পক্ষান্তরে যে কৃপন বা জাকাত আদায় করে না, সে আল্লাহ পাকের থেকে পৃথক, জান্নাতের থেকে এবং মানুষের থেকেও পৃথক। কিন্তু জাহান্নামের খুব নিকটে থাকে। (তিরমিজি শরীফ ২য় খণ্ড পৃঃ ১৭)

 

‎‫عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلَّهِ يَوْمَ وَرَجُلٌ شَلَّهِ يَوْمَ‬‎ ‎‫وَرَجُلٌ مَلَّهُ مَصَدَّقَ إِخْتُ لَفَعُ تَصَدَّقَ إِخْتُلُهُمْ تَصَدَّقَ‬‎ ‎‫ا لا ظل إلا ظله..‬‎

 

‎‫تُنْفِقُ يَمِينُهُ بخاري শরীফ জ ১, ص : ৯১‬‎

 

৩- কিয়ামতের ময়দানে যে সাত জন আল্লাহ পাকের আরশের ছায়াতলে অবস্থান করবে, তার মধ্যে একজন হল, যে আপন মাল থেকে গোপন জাকাত আদায় করে। (বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড পৃঃ ৯১)

 

‎‫قُلْنَا لِلنَّبِيِّ ﷺ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ بَعْضَ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ .‬‎

 

‎‫أَيُّنَا أَسْرَعُ بِكَ لُحُوقاً (الحديث) بخاری শরীফ জ:১, ص: ১৯১‬‎

 

৪- এক সময় উম্মাহাতুল মোমিনিনগণ হুজুর (সঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, কিয়ামতের ময়দানে আমাদের মধ্যে আপনার সাথে সর্ব প্রথম কে সাক্ষাত করবে? এরশাদ হল, তোমাদের মধ্যে যার হাত সব থেকে বড়। উম্মাহাতুল মোমিনিনগণ বাহ্যিক মতলব বুঝে একটা কাঠ নিয়ে নিজেদের সকলের হাত মাপতে শুরু করলেন। হজরত সাওদা (রাঃ) এর হাত সব থেকে বড় হল। কিন্তু সর্ব প্রথম হজরত জয়নব (রাঃ) এন্তেকাল করেন। বোঝা গেল হাত বড় হওয়া বলতে দানশীলতা মতলব ছিল। বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড পৃঃ ১৯১)

 

‎‫قَالَ سَمِعْتُ عَدِى بْنَ حَاطِمٍ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيُّ ﷺ يَقُولُ اتَّقُوا‬‎ ‎‫النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمَرَةٍ – বুখারী শরীফ ج১، ص: ১৯১‬‎

 

৫- হজরত আদি বিন হাতিম (রাঃ) বলেন, আমি হুজুর পাক (সঃ) কে বলতে শুনেছি, হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা একটা খেজুর আল্লাহ পাকের রাস্তায় দান করে হলেও জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাক। (বোখারী ১ম খণ্ড পৃঃ ১৯১)

 

‎‫عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ تَصَدَّقَ بِعَدْلٍ تَمَرَةٍ‬‎

 

‎‫مِنْ كَسَبٍ طَيِّبِ وَلَا يَقْبَلُ اللهُ إِلا الطَّيِّبَ فَإِنَّ اللَّهَ يَتَقَبَّلُهَا بِيَمِينِهِ ثُمَّ‬‎ ‎‫يُرَبِّيهَا لِصَاُهُمَ أَبَحَبِّيَا لِصَاُهُ ْ فُلُوَّهُ حَتَّى تَكُونَ مِثْلَ الْجَبَلِ -‬‎ ‎‫بخاری শরীফ জ১, স: ১৮৯‬‎

 

৬- হজরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন হুজুর পাক (সঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটা খেজুর পরিমান সাদকা করে, আর আল্লাহ পাক হালাল ব্যতীত কোন কিছু কবুল করেন না। আল্লাহ পাক সেটা আপন হাতে নিয়ে লালন পালন করেন। এবং তার সওয়াব বাড়িয়ে থাকেন। এমন কি তার সওয়াব কে একটা পাহাড় পরিমান করে দেন। (বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড পৃঃ ১৮৯)

 

‎‫عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْلَانِ أَبِي أَوْفَى قَالَ كَانَ النَّبِيُّ ﷺ إِذَا آتَاهُ قَوْمٌ بِصَدَقَتِهِمْ قَالَ‬‎ ‎‫اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَآآلُ فَتِيُ فَيُفِي فَقَهُمَّ صَلِّ عَلَآآلُفَيُفِي فَقَتٍ فَقَالَ اللَّهُمَّ‬‎ ‎‫صَلِّ عَلَى آلِ أَبِي أوفى بخاري شريف ج১, ص:২০৩‬‎

 

৭- হুজুর পাক (সঃ) এর কাছে কেউ সাদকা দিতে আসলে তিনি অতি খুশি হতেন হজরত আবু আওফা (রাঃ) হুজুরের দরবারে সাদকা দিতে আসলে হুজুর (সঃ) তার জন্য এই দোওয়া করেছিলেন, হে আল্লাহ! আবু আওফার বংশধরদের উপর রহমত অবতীর্ণ কর। (বোখারী ১ম খণ্ড পৃঃ ২০৩)

 

যারা আপন মালের জাকাত আদায় করে না, সব কিছু সঞ্চয় বা গচ্ছিত করে রাখে, তাদের শাস্তি সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ১০ পারা, সুরা তওবা, ৪৩ আয়াতে বলেন-

 

‎‫الَّذِينَ يَكْتِرُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ فَبَشِّرُهُمْ بِعَذَابٍ‬‎ ‎‫آلِيمٍ بِعَذَابٍ آلِيمٍ مَ فَتُكُوَى بِهَا حِيَاهُهُمْ وَ جُنُوبُهُمْ وَ ظُهُورُهُمْ هَذَا مَا‬‎ ‎‫كَنَرْتُمْ لِانْفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنتُمْ تُكُنْتُمْ فَذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَوَكُمْ‬‎

 

অর্থ:- যারা সোনা-রূপা গচ্ছিত করে রাখে আল্লাহ পাকের রাস্তায় ব্যয় করে না, তাদের কঠিন আজাবের সংবাদ দাও। যে দিন তাদের সোনা রূপা জাহান্নামের আগুনে গরম করে তাদের কপালে, পাজরে এবং পিঠে ছাকা দেওয়া হবে। তাদের কে বলা হবে, এটা ঐ সমস্ত বস্তু যা তোমরা পৃথিবীতে নিজেদের জন্য গচ্ছিত করে রেখেছিলে সুতরাং তোমরা যা গচ্ছিত করেছিলে, তার শাস্তি ভোগ কর।

 

জাকাত আদায় না করার শাস্তি

১- হুজুর পাক (সঃ) বলেন, যাকে আল্লাহ পাক সম্পদ দান করেছেন, যদি সে জাকাত আদায় না করে, তাহলে কিয়ামতের ময়দানে ঐ সম্পদ সমূহ কে একটা সাপের আকৃতি তৈরি করা হবে ঐ সাপ তাকে দংশন করতে থাকবে এবং বলতে থাকবে আমি তোমার সেই গচ্ছিত সম্পদ। (বোখারী শরীফ)

২- এক সময় হুজুর পাক (সঃ) দুজন মহিলার হাতে সোনার চুড়ি দেখলেন, হুজুর (সঃ) তাদের কে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা এর জাকাত দাও না? তারা উত্তর দিল, না, ইয়া রসুলুল্লাহ! অতঃপর হুজুর (সঃ) তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি এর পরিবর্তে আগুনের চুড়ি পরতে চাও? তারা বলল, না, ইয়া রসুলাল্লাহ! হুজুর (সঃ) বললেন, এর জাকাত আদায় কর। (তিরমিজি)

যারা জাকাত আদায় করেনা তারা কিয়ামতের ময়দানে হুজুর পাক (সঃ) এর সুপারিশ পাবে না, হুজুর পাক (সঃ) বললেন, আমি তোমাদের জন্য কিছু করতে পারব না, কত বড় কঠিন শাস্তি যার সুপারিশ ব্যতীত জান্নাত নসীব হওয়া কঠিন, তার সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হওয়া কত বড় হতভাগ্যের ব্যাপার, একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়।

হে পরওয়ার দেগার! আমাদের সকলকে আপনার প্রিয় হাবিবের সুপারিশ শাফায়াত নসীব করুন। আমীন….

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top