এ'তেকাফ কি ?
এ’তেকাফ কি ? এ’তেকাফের অর্থ অবস্থান করা। আর শরীয়াতের ভাষায় এ’তেকাফের নিয়াতে মসজিদে অবস্থান করা। রমজানের শেষ দশ দিন যেহেতু এ’তেকাফ করা সুন্নাতে মোয়াক্কাদা কেফায়া। হুজুর (সঃ) অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান শরীফে বেশী এবাদাত করতেন। তাঁর জীবনের শেষ রমজানে কুড়ি দিন এ’তেকাফ করেছিলেন।
মাসয়ালা :- এ’তেকাফের জন্য মসজিদ হওয়া জরুরি সে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াত হওয়া জরুরি নয়।
মাসয়ালা :- এ’তেকাফের জন্য নিয়াত জরুরি। বিনা নিয়াতে মসজিদে থাকলে এ’তেকাফ হবে না।
মাসয়ালা :– এ’তেকাফে হায়েজ নেফাস ও জানাবাত হতে পাক হওয়া জরুরি। নাপাক অবস্থায় এ’তেকাফ হয় না।
মাসয়ালা :- সর্ব্বোত্তম এ’তেকাফ কাবা শরীফে তার পর মসজিদে নাবাবীতে তারপর বায়তুল মুকাদ্দাসে তার পর জামে মসজিদে তার পর মহাল্লার মসজিদে এ’তেকাফ করা উত্তম।
Table of Contents
এ'তেকাফ তিন প্রকার:-
(১) ওয়াজিব – এ’তেকাফ
অর্থাৎ এমন এ’তেকাফ যার মান্নত করা হয়েছে। যদি কেউ এ’তেকাফের মান্নত করে তবে তা পুরণ করা ওয়াজিব।
(২) সুন্নাত এ’তেকাফ
অর্থাৎ রমজান শরীফের শেষ দশ দিন এ’তেকাফ করা সুন্নাত। হুজুর (সঃ) আজীবন রমজান শরীফে এই সময় এ’তেকাফ করতেন।
(৩) মুস্তাহাব এ’তেকাফ
ওয়াজিব ও সুন্নাতে মোয়াক্কাদা কেফায়ার দিন গুলি ছাড়া সারা বছরের যে কোন দিন এ’তেকাফ করা মুস্তাহাব।
মাসয়ালা :- ওয়াজিব ও সুন্নাতে মোয়াক্কাদা কেফায়া এ’তেকাফের জন্য রোজা শর্ত। তাই যখনই কেউ এ’তেকাফ করবেন তার জন্য রোজা রাখা জরুরী কিন্তু নফল এ’তেকাফের জন্য রোজা শর্ত নয়।
মাসয়ালা:- যদি কেউ এমন নিয়াত করে যে আমি এ’তেকাফ করব তবে রোজা রাখব না। তাও তাকে রোজা রেখে এ’তেকাফ করতে হবে।
মাসয়ালা :- ওয়াজিব এ’তেকাফ কমপক্ষে একদিনের হয় আর বেশী যতদিনের সে নিয়াত করবে।
মাসয়ালা:- নফল এ’তেকাফের কোন সময় নির্দ্ধারিত নেই বরং অতি অল্প সময় এক মিনিটের জন্যও হতে পারে।
মাসয়ালা:- এ’তেকাফ অবস্থায় শারীরিক বা শরিয়াত সম্পর্কিত প্রয়োজন ছাড়া এ’তেকাফ স্থান হতে বাইরে আসা হারাম। যেমন- পেশাব, পায়খানা ফরজ গোছল ইত্যাদি শারীরিক প্রয়োজন এবং জুময়া, ঈদ, উক্ত মসজিদে যদি পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াত না হয় তাহলে অন্য মসজিদে জামায়াতের উদ্দেশ্যে বার হওয়া শারয়ী বা শরীয়াত সম্পর্কিত প্রয়োজন।
মাসয়ালা :- এ’তেকাফ কারী কোন প্রয়োজনে যদি বার হয় তাহলে প্রয়োজন মেটার পর যেন কাল বিলম্ব না করে। বরং যত নিকটে বা যত সত্বরে সম্ভব কাজ মিটিয়ে নিজ স্থানে ফিরে আসবে।
মাসয়ালা :– অতি প্রয়োজন ছাড়া কোন তুচ্ছ প্রয়োজনে স্থান ত্যাগ করা জায়েজ নয়।
মাসয়ালা :- যদি এ’তেকাফ কারী জুময়া পড়ার জন্য বার হন তাহলে সেখানে গিয়ে জুময়ার আগের সুন্নাত ও তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামাজ পড়তে পারেন এমন সময় বার হবেন। (দুরে মুখতার ২/১৩২)
মাসয়ালা :– এ’তেকাফ কারীকে যদি জোর পূর্বক স্থান হতে বার করে দেওয়া হয় বা কোন শারীরিক অথবা শরয়ী প্রয়োজনে বার হয়। কিন্তু বার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে এ’তেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
মাসয়ালা :– স্বেচ্ছায় অথবা ভুলে যদি স্ত্রী সহবাস করে ফেলে, তাহলে এ’তেকাফ বাতিল হয়ে যাবে।
মাসয়ালা :- এ’তেকাফ অবস্থায় অপ্রয়োজনে কোন দুনিয়াবী কাজে মত্ত হওয়া মাকরূহ তাহরিমী। যেমন- কেনা বেচা করা তবে যদি বাড়ীর আর কোন লোক কেনা বেচার না থাকে বা তিনি ছাড়া কেউ ভাল কেনা বেচা না করতে পারেন এবং উক্ত জিনিস মসজিদে আনা সম্ভব নয় তাহলে তিনি কেনা বেচা করতে পারবেন। (দুরে মুখতার ২/১৩৪)
মাসয়ালা :- এতেকাফ অবস্থায় চুপচাপ বসে থাকাও মাকরূহ তাহরিমী। কুরআন শরীফ তেলাওয়াৎ, জিকির-ফিকির, কোন দ্বীনি মাসয়ালা-মাসায়েল পড়া বা পড়ানো ইত্যাদি কাজে লিপ্ত থাকবেন। আর মিথ্যা কথা, পরনিন্দা, ফাহেশ কথা দুনিয়াবী গল্প গুজব করা থেকে বিরত থাকবেন। (দুরে মুখতার ২/১৩৫)
মাসয়ালা:- কোন এ’তেকাফ কারী ডাক্তার কবিরাজ যদি মসজিদেই রোগী দেখে ঔষধ লিখে দেন। বা শারীরিক প্রয়োজনে বাইরে এসে রোগীর পরিচয় শুনে বা দেখে ঔষধ লিখে দেন তাহলে জায়েজ হবে।
মাসয়ালা :- বড় শহরের মসজিদে এ’তেকাফ করলে ছোট শহর বা গাঁয়ের মসজিদ বাসীদের দায়ীত্ব রহিত হবে না।’
মাসয়ালা:- যে মসজিদে এ’তেকাফ করবেন ঐ মসজিদের সমস্ত জায়গায় যেথা ইচ্ছা বসতে পারেন শুতে পারেন কোন অসুবিধা নেই।
মাসয়ালা :- একদিন এক রাতের থেকে কম হলেও নফল এতেকাফ ভঙ্গ করলে কাজা ওয়াজিব হয় না।
মাসয়ালা :- রমজান মাসের শেষ দশ দিন এতেকাফ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কেফায়া অর্থাৎ কেউ একজন করলে সবাই দায়মুক্ত হয়ে যাবেন।
এ’তেকাফ কি,এ’তেকাফ কি,এ’তেকাফ কি,এ’তেকাফ কি,এ’তেকাফ কি,
رَبَّنَا تَقَبَّلُ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ وَصَلَّى اللَّهُ مِنَّا مِنَّا مِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ وَصَلَّى اللَّهُ مِنَّا مِنَّا مِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ اَمَّدٍ وَ آلِهِ وَأَصْحَابِهِ اجْمِعِينَ بِرَحْمَتِكَ يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
**