রমজানের পরিচয়:পুণ্য ও বরকতের মাস কেন ?

তিলাওয়াতের সাজদা কখন ওয়াজিব হয় তার মাসায়েল

রমজানের পরিচয়,পুণ্য ও বরকতের মাস কেন ? বিস্তারিত,

রমজানের পরিচয়,হজরত সালমান ফারসী (রাঃ) হতে বর্ণিত রমজানের মাসে ফরজ ও নফল আমলের মহত্ত্ব। ইফতার পরিহাস এবং করণীয় সম্পর্কে নবী (সঃ) এর উপদেশ।

‎‫عَنْ سَلْمَانَ الْفَارْسِي ۖ قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ ﷺ فِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ شعْبَانَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا‬‎ ‎‫النَّاسُ مِنْ شعْبَانَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ

يَا أَيُّهَا الْفَارْسِهٌ شَظْهٌ شَظْهٌ شَلٌ شَرٌ شَرٌ أَيُّهَا النَّاسُ‬‎ ‎‫قَدْ رٌ مُبَارَكٌ شَهْرٌ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ شَهْرٌ جَعَلَ اللَّهُ صِيَامَهُ فَرِيضَكٌ شَهْرٌ فِيهً وَقِيَامَ لَيْرٌ‬‎ ‎‫فِيهً وَقِيَامَ لَيْرٌ تَيْلِهً خَصْلَةٍ مِّنَ الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةٌ فِيمَا سِوَاهُ وَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً‬‎ ‎‫فِيهِ كَمَنْ أَدَى سَبْعِينَ

فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ وَهُوَ شَهْرُ الصَّبَرَ وَ الصَّوْرُ الصَّبَرَ وَ‬‎ ‎‫الصَّوْرُ الصَّبَرَ وَ الصَّوْرُ الصَّبَرَ وَ الصَّوْرُ الصَّبَرَ وَ الصَّوْرُ الصَّبَرَ وَ الصَّوْرُ الصَّبَرَ وَ الصَّبْرُ‬‎ ‎‫الصَّبْرُ مُوَاسَاةِ وَشَهْرٌ يُرَادُ فِيهِ رِزْقُ الْمُؤْمِنِ مَنْ فَطَرَ فِيهِ صَائِمَا

كَانَ لَهُ مَغْفِرَنِ مَغْفِرَةٌ‬‎ ‎‫مَغْفِرَةٌ لِذُنُوبِهِ وَ عَقَرَةٌ لِذُنُوبِهِ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ مِنْ غَيْرِ أَن يَنقُصُ مِنْ أَجْرِهِ شَيْءٌ قُلْنَا يَا‬‎ ‎‫رَسُولَ اللَّهِ ﷺ لَيْسَ مِنَّا نَجِدُ مَا نُفْطِرُ بِهِ الصَّائِمَ فَقَالَ رَسُولُ صَائِمَ فَقَالَ رَسُولُ صَابَ اللَّهِ مَا‬‎ ‎‫رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يُعْطِي اللَّهَوَ اللَّهِ ﷺ عَلَى تَمْرَةٍ أَوْ شَرَبَةٍ مِنْ مَاءٍ

أَوْ مَذْقَةٍ لَبَنٍ وَهُوَ‬‎ ‎‫شَهْرٌ أَوَّلُهُ رَحْمَةٌ عَوَّلُهُ رَحْمَةٌ عَوْسَطُهُ مَغْفِرٌ عِنِّي مَغْرٌ عَوْسَطُهُ مَغْفِرٌ عَوْسَطُهُ ِ وَ مَنْ خَفَّفَ‬‎ ‎‫عَنْ مَمْلُوكِهِ فِيهِ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ وَأَعْتَقَهُ مِنَ النَّارِ

وَاسْتَكْثِرُوا فِيهِ مِنْ أَرْبَعِ خِصَالٍ خَصْلَتَصَيْنِ‬‎ ‎‫تُرَضُونَ خَصْلَتَصِيْنِ تُرَضُونَ خَمُ بَلَكُمْ وَأَعْتَقَهُ مِنَ النَّارِ وَاسْتَكْثِرُوا فِيهِ مِنْ أَرْبَعِ‬‎ ‎‫خِصَالٍ خَصْلَتَصَيْنِ تُرَضُونَ خَلَتَكُمْ بِتَيْنِ تُرَضُونَ خَمُ الْمِنْ وَرَضُونِ مْ عَنْهُمَا

فَأَمَّا الْخَصْلَتَانِ‬‎ ‎‫اللَّتَانِ تُرْضُونَ بِهِمَا رَبَّكُمْ فَشَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَ تَسَغْتُ وَ تَسْتُهُ إِلَّا اللَّهُ وَ تَسَغْتُهُ‬‎‎‫أمَّا الخَصْلَتَانِ اللَّتَانِ لاَ غِنَاءَ بِكُمْ عَنْهُمَا لَتَسْتَلُونَ اللَّهَ الْجَنَّةَ وَ تَعُوذُونَ الْجَنَّةَ وَ‬‎ ‎‫تَعُوذُونَ الْجَنَّةَ وَ تَعُوذُونَ اللَّتَانَ بِهِ مِنَ النَّارِ وَ مَنَاءَ سَقَماِ سَقَماً بِهِ مِنَ النَّارِ

وَ مَنْاً‬‎ ‎‫وْضِي شَرَبَةً لا يَظْمَا حَتَّى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ (رواه ابن خزيمة والبيهقي)‬‎

অর্থ- হজরত সালমান ফারসী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, নবী করীম (সঃ) শাবানের শেষ তারিখে আমাদের নছীহত করেছেন যে,

তোমাদের মাথার উপর এমন একটি মোবারক মাস ছায়া স্বরূপ আসছে, যার মধ্যে শবে ক্বদর নামে একটি রাত আছে।

যা হাজার মাস হতেও উত্তম। সেই মাসের রোজা আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপর ফরজ করেছেন এবং রাত্রি জাগরণ অর্থাৎ তারাবীহ পড়াকে পুণ্যের কাজ করে দিয়েছেন।

যে ব্যক্তি এই মাসে কোন নফল (আমল) আদায় করল সে যেন রমজানের বাইরে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে এই মাসে একটি ফরজ আদায় করল সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করল। 

হুজুর (সঃ) আরও বলেন এটা ছবরের মাস এবং ছবরের বদলা একমাত্র জান্নাত।

এটা মানুষের সাথে সহানুভুতি করার মাস। এই মাসে মোমিনের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে এটা তার জন্য গোনাহ মাফ ও দোজখের আগুন হতে নাজাতের কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং ঐ রোজাদারের ছওয়াবের সমতুল্য ছওয়াব সে লাভ করবে অথচ সেই রোজাদারের ছওয়াব বিন্দুমাত্র কম হবে না।

ছাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহর নবী! আমাদের মধ্যে অনেকের এই সামর্থ্য নেই যে, সে অপরকে ইফতার করাবে অর্থাৎ পেট ভর্তি করে খাওয়াবে হুজুর (সঃ) বলেন পেট ভর্তি করে খাওয়ানো জরুরী নয়, যে ব্যক্তি কাউকে একটি খেজুর দ্বারা ইফতার করাবে আল্লাহ পাক তাকে ও ঐ

ছওয়াব দান করবেন। হুজুর (সঃ) আরও বলেন এটা এমন একটি মাস যার প্রথম দিকে আল্লাহ পাকের রহমত অবতীর্ণ হয়। দ্বিতীয় অংশে মাগফেরাত তৃতীয় অংশে দোযখ হতে মুক্তি দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি এই মাসে আপন দাস মজদুর হতে কাজের বোঝা হালকা করে দেয়, আল্লাহ পাক তাকে মাগফেরাত করে দেবেন এবং দোজখের আগুন থেকে নাজাত দেবেন।

হুজুর (সঃ) আরও বলেন চারটি কাজ রমজান মাসে বেশী করে করবে, দুটি কাজ আল্লাহ পাককে রাজি করার জন্য এবং দুটি কাজ যা না করলে তোমাদের উপাই, নেই।

প্রথম দুটি কাজ যা দ্বারা আল্লাহকে রাজি করবে তা হল কলেমা তৈয়েবা ও এস্তেগফার বেশি বেশি করে পড়বে।

দ্বিতীয় দুটি কাজ এই যে, আল্লাহর নিকট বেহেস্ত প্রার্থনা করবে ও দোযখ থেকে মুক্তি চাইবে। যে, ব্যক্তি এই মাসে কোন রোজাদারকে পানি পান করাবে আল্লাহ পাক কিয়ামতের দিনে তাকে আমার হাউজ (হাউজে কওছার) থেকে এমন কাওছারের পানি পান করাবেন, যে বেহেশতে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার আর পিপাসা লাগবে না। (বায়হাকী শরীফ)

ফায়েদা:- এই হাদিছে কয়েকটি জরুরী বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

প্রথমতঃ শাবানের শেষ তারিখে রমজানের ফজিলত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়ে সাবধান করেদিয়েছেন যেন রমজানের একটি মুহূর্তও ব্যর্থ না যায়। অতঃপর কয়েকটি জরুরী বিষয় উল্লেখ করেছেন। তারমধ্যে সর্ব প্রথম শবে কদর, যা অতি গুরুত্বপূর্ণ রাত,

 তারপর হুজুর (সঃ) বলেন আল্লাহ পাক রমজানের রোজা ফরজ করেছেন এবং রাত্রি জাগরণ অর্থাৎ তারাবীহ নামাজকে সুন্নাত করেছেন। এই হাদিছ দ্বারা প্রমান হয় যে, তারাবীহ নামাজ আল্লাহ পাকের তরফ থেকে এসেছে। 

তবে অনেক ক্ষেত্রে হুজুর (সঃ) এই নামাজ কে নিজের সুন্নাত বলে অবিহিত করেছেন এটা অধিক তাকিদের জন্য করা হয়েছে। একারণেই একমাত্র রাফেজী সম্প্রদায় ব্যতীত সমস্ত মুসলমানের নিকট এটা অপরিহার্য সুন্নাত।

 

হজরত শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দেছ দেহলবী “মাছাবাতা বিছ সুন্নাত” নামক কিতাবে লিখেছেন যে, কোন শহর বাসী যদি তারাবীহ নামাজ ছেড়ে দেয় তবে তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা বাদশার কর্তব্য।

 

এখানে বিশেষ একটি জিনিসের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে যে, অনেকেরই ধারনা যে কোন মসজিদে ৮/১০ দিন খতম তারাবীহ শুনে নেওয়া যথেষ্ঠ।

 প্রকৃতপক্ষে তারাবীহ নামাজে পুরো কুরআন শরীফ পড়া বা শুনা একটি সুন্নাত আর সম্পূর্ণ রমজান মাসে তারাবীহ পড়া দ্বিতীয় সুন্নাত ৮/১০ দিন খতম তারাবীহ শুনলে একটি সুন্নাত আদায় হয় বটে কিন্তু অপর সুন্নাত আদায় হল

 

না। অতঃপর হুজুর (সঃ) রোজা ও তারাবীহ ব্যতীত বিভিন্ন সৎকাজের নির্দেশ করে বলেন যে, এই মাসে নফলের ছওয়াব অন্য মাসের ফরজের সমতুল্য।

 

রমজানের পরিচয় ও ফজিলত সম্মন্দে বলেছেন এই মোবারাক মাসের সঙ্গে কুরআন শরীফের বিশেষ সম্পর্ক আছে সাধারণত সমস্ত আসমানী কেতাব এই মাসে অবতীর্ণ হয়েছে। পবিত্র কুরআন শরীফ লওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে এই মাসে অবতীর্ণ হয় এবং সেখান থেকে প্রয়োজন অনুসারে অল্প অল্প করে ২৩ বছর যাবত নাজিল হতে থাকে। হজরত ইব্রাহীম (আঃ) এর সহিফা এই মাসের প্রথম কিংবা তৃতীয় তারিখে নাজিল হয়।

 হজরত দাউদ (আঃ) ১৮ কিংবা ১২ তারিখে জবুর প্রাপ্ত হন। ছয় তারিখে মুসা (আঃ) কে তাওরাত দান করা হয়।

 ১৩ তারিখে ঈসা (আঃ) কে ইনজীল দেওয়া হয়। হজরত জিবরাঈল (আঃ) হুজুর (সঃ) কে প্রতি রমজান মাসে পূর্ণ কুরআন শরীফ শুনাতেন অন্য রেওয়ায়েতে আছে হুজুর (সঃ) ও জিবরাঈল (আঃ) কে শুনাতেন। ওলামাদের মতে এর দ্বারা কুরআন শরীফ বারংবার পড়া মুস্তাহাব প্রমাণিত হয়। মূলকথা এই মাসে যতটুকু সম্ভব তেলাওয়াতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

 

তার পর হুজুর (সঃ) এই মাসের কিছু বিশেষত্ব আদব বর্ণনা করেছেন, প্রথমত এই মাসকে ধৈর্য্য ও সবরের মাস বলা হয়েছে। অর্থাৎ কিছুটা কষ্ট অনুভব হলেও আনন্দ সহকারে গ্রহণ করে নেবে এবং তারাবীর কষ্টকেও হাসিমুখে বরণ করে নেবে, একে মসীবত মনেকরবে না।

 হুজুরে পাক (সঃ) আরও বলেন এটা সহানুভূতির মাস অর্থাৎ গরীব দুখীদের প্রতি নম্র ব্যবহার করবে নিজের এফতারের জন্য দশটি জিনিস তৈরী হলে তাদের জন্য কমপক্ষে দুই চারটি ব্যবস্থা করবে। বরং আমাদের উচিত হবে তাদের জন্য নিজেদের চাইতে ভাল সেহরী ও এফতারের ব্যবস্থা করা।

রমজান মাস কে তিন ভাগে ভাগ করার রহস্য

এফতার করাবার ফজিলাত

রমজানের পরিচয় ও ফজিলত সম্মন্দে বলেছেন হুজুর (সঃ) তারপর এফতার করাবার ফজিলাত বর্ণনা করেছেন একটি রেওয়ায়েতে আছে, যে ব্যক্তি হালাল রুজি দিয়ে কাউকে এফতার করাবে।

ফেরেস্তাগণ রমজানের প্রতিটি রাতে তার উপরে রহমত পাঠাবেন শবেকদরে স্বয়ং জিবরাঈল (আঃ) তার সঙ্গে মুসাফাহা করেন। যার সঙ্গে জিবরাঈল (আঃ) মুসাফাহা করেন তার অন্তর কমল হয় এবং চোখ থেকে অশ্রু ধারা প্রবাহিত হয়।

বিখ্যাত মুহাদ্দিস হাম্মাদ বিন সালামা প্রতিদিন পঞ্চাশ জনকে এফতার করাতেন।

 

রমজান মাস কে তিন ভাগে ভাগ করার রহস্য

রমজানের পরিচয়ঃ

রমজান মাস তিন ভাগে ভাগ করার কারণ হল যে, মানুষ ও তিন ভাগে বিভক্ত

(১) যাদের মাথায় কোন পাপের বোঝা নেই তারা রমজানের প্রথম থেকেই আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত হতে থাকেন

(২) যাদের হালকা ধরণের পাপ আছে তারা দশদিন রোজা রাখার পর আল্লাহর মাগফেরাতের আশা করতে পারে

(৩) ঐ সব লোক যারা অধিক পাপি তারা অনেক দিন রোজা রাখার পর দোজখ থেকে মুক্তি পায়। আর যারা শুরু থেকে রহমত পায় তাদের জন্য শেষ পর্যন্ত রহমত বর্ষিত হতে থাকে।

 

রমজানের শেষ রাত মজুরী পাওয়ার রাত

 

‎‫عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أُعْطِيَتْ أُمَّتِي خَمْسَ خصَالٍ‬‎ ‎‫فِي رَمَضَانَ لَمْ تُعْطَى لَمْ تُعْطَانَ لَمْ تُعْطَى لَمْ تُعْطَى أُمَّةٌ قَبْلُفِمِ الْمَفِمِ‬‎ ‎‫خُمْلٌ أُمَّةٌ قَبْلِ اَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ المِسْكِ وَ يَسْتَغْفِرُ لَهُمُ الْحِيتَانُ‬‎ ‎‫حَتَّى يُفْطِرُوا وَ يُزَيِّنُ اللَّهُ عَزَّ وَجَيِّنُ اللَّهُ عَزَّ وَجَيِّنُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلًا ُ يُوشِكُ‬‎ ‎‫عِبَادِئُ الصَّالِحُونَ أن يُلْقُوا عَنْهُمُ المَوْنَةَ وَيَصِيرُوا إِلَيْكَ وَ تُصَفَّدُ فِيهِ مَرَدَةُ‬‎ ‎‫الشَّيَاطِينِ فَلَا يَخْلِصُوا فِيهِ إِلَى مَا كَانُوا يَخْلِصُونَ إِلَيْرُوا يَخْلِصُونَ إِلَيْرِهِ فِيْرِهِ‬‎ ‎‫فِيْهِ غَلِصُونَ ْ فِي آخرِ لَيْلِهِ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَهِيَ لَيْلَةُ الْقَدْرِ قَالَ لَا وَلَكِنَّ‬‎ ‎‫الْعَامِلَ إِنَّمَا الْعَامِلَ إِنَّمَا يُوفَى أَجْرَهُ قَلَهُ ى)‬‎

 

অর্থ- হজরত আবুহুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে হুজুর আকরাম (সঃ) বলেন পবিত্র রমজান উপলক্ষে আমার উম্মতকে পাঁচটি বস্তু দেওয়া হয়েছে। যেটা পূর্বের উম্মতগণকে দেওয়া হয়নি। 

(১) রোজাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর নিকট মৃগ নাভীর থেকে বেশী পছন্দনীয়।

 (২) সমুদ্রের মাছেরা রোজাদারের জন্য এফতার পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে।

 (৩) বেহেশ্ত প্রতিদিন তাদের জন্য সাজানো হয় এবং আল্লাহ পাক বলেন আমার বান্দাগণ দুনিয়ার যাতনা দূরে ফেলে অতিশীঘ্র তোমার নিকট আসছে।

 (৪) রমজান মাসে বিতাড়িত শয়তানকে শিকলে বেধে দেওয়া হয় যে কারণে ঐ সব পাপ করাতে পারেনা যা অন্য মাসে করান সম্ভব। 

(৫) রমজানের শেষ রাতে রোজাদারের গোনাহ মাফ হয়ে যায়। সাহাবা (রাঃ) বলেন এই ক্ষমা কি শবে ক্বদরে হয়ে থাকে? হুজুর (সঃ) বললেন না, বরং নিয়ম হল মজদুর কাজ শেষ করবার পর মজদুরি পেয়ে থাকে। (আহমাদ ও বাইহাকী)


ফায়দাহ:- নবীয়ে করীম (সঃ) উক্ত হাদিছে এই উম্মতের পাঁচটি বৈশিষ্ঠের কথা বলেছেন যেটা আর কোন উম্মতের ভাগ্যে জোটেনি। আফছোস! আমরা যদি তার মর্যাদা বুঝতাম তবেই হাসেল করবার জন্য যত্নবান হতাম।

রমজান উপলক্ষে এই উম্মতের পাঁচটি বৈশিষ্ট

প্রথম বিশেষত:- রোজাদারের ক্ষুধাজনীত মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর নিকট মেস্ক থেকে প্রিয়। মোহাদ্দেছীনগণ এর আটটি তাৎপর্য বর্ণনা করেছেন তবে তার মধ্যে তিনটি অর্থ অধিক পছন্দ সই। 

(ক) আল্লাহ পাক পরকালে সেই ঘ্রাণের প্রতিদান মেস্ক থেকে ও সুগন্ধি দ্রব্য দ্বারা দেবেন। 

(খ) রোজাদার যখন কবর থেকে উঠবে তার মুখ থেকে সুগন্ধি ও খুশবু বার হতে থাকবে। 

(গ) দুনিয়াতেই সেই ঘ্রাণ আল্লাহর নিকট মেল্ক থেকে সুগন্ধ হয়। কারণ প্রেমের সঙ্গে এর সম্পর্ক। প্রেমিকের নিকট মাহবুবের বদবু ও হাজার খসবু থেকে উত্তম।

একটি মাসয়ালা রমজানের পরিচয় ও ফজিলত,

হাদিসে বর্ণিত রোজাদারের মুখের গন্ধকে প্রশংসা করা হয়েছে। রোজা রেখে সকল প্রকার মাজন, গুল, গুড়াকু, ইত্যাদি দিয়ে দাঁত মাজা মাকরুহ।

 এই জন্য অনেকে বিকালে মেসওয়াক মাকরুহ বলেছেন কিন্তু হানাফী মাজহাব মতে সব সময় কাঁচা বা শুকনো মেসওয়াক দ্বারা মেসওয়াক করা জায়েজ ও মুস্তাহাব। (বেহেস্তী জেওর, ৩য় খণ্ড, ১৩ পৃঃ) কেন না মেসওয়াকে দাঁতের দুর্গন্ধ দূর হয়। আর হাদিসে যে গন্ধের কথা উল্লেখ আছে সেটা পেট খালি থাকার জন্য নির্গত হয় দাঁতের জন্য নয়।

‎‫وَلَا يَكْرَهُ لَهُ أَى الصَّائِمِ السَّواكَ آخِرِ النَّهَارِ بَلْ هُوَ سُنَّةٌ كَأَوَّلِهِ وَفِي‬‎ ‎‫الْكِفَايَةِ كَانَ النَّبِيُّ وَرَخَرَ النَّبِيُّ أَلَكُّ أَرَّكَ وَلَكَ ﷺ هُوَهُوَ صَائِمٌ وَلَا‬‎

‎‫يَكْرَهُ لَهُ وَلَوْ كَانَ رَطَبَاً أَخْضَرَ أو مُبْلِمَ (مراقي الفلاح ص : ২৫০)‬‎

দ্বিতীয় বিশেষত্ব :– মাছের দোওয়া চাওয়া এর অর্থ এই যে তার জন্য অধিক সংখ্যায় দোওয়া প্রাপ্তির ব্যবস্থা আছে। অন্য রেওয়ায়েতে আছে ফেরেস্তারা তার জন্য ক্ষমা চান।

তৃতীয় বিশেষত্বঃ– বেহেস্তকে সুসজ্জিত করা। কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে রমজানের জন্য বছরের শুরু থেকেই জান্নাতকে সাজানো হয়। প্রথা আছে যার আগমনের যত বেশি গুরুত্ব তাঁর তত বেশি গুরুত্ব সহকারে অনেক পূর্ব থেকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

 

চতুর্থ বিশেষত্বঃ– দুষ্টুমতি শয়তানকে বন্দী করা যে কারণে পাপের প্রাধান্য কমে যায়। রমজান মাসে অফুরন্ত রহমত ও ইবাদতের আধিক্য বশতঃ এটাই উচিত ছিল যে পাপ কাজের দিকে শয়তান মরনপন চেষ্টা করবে, কিন্তু দেখা যায় সমষ্টিগত ভাবে এই মাসে পাপ কাজ কমে যায়। অনেক শারাবী বিশেষ করে রমজানে শারাব ত্যাগ করে। তবুও দেখা যায় কিছু কিছু গোনাহ এই মাসে সংঘটিত হয়।

এর সহজ উত্তর এই যে, বড় বড় শয়তান গুলো শিকলে বন্ধ হয় বটে কিন্তু ছোট ছোট শয়তানের ফাঁদে পড়ে মানুষ তখন পাপ কাজ করে। বা রমজানের আগমনের পূর্বে শয়তানের অনুসারী হয়ে যারা সারা বছর পাপকাজ করতে থাকে, রমজান মাসে শয়তান বন্দি হলেও তাদের সারা বছরের অভ্যাসের কারণে কিছু লোক পাপ কাজ করতে থাকে।

পঞ্চম বিশেষত্ব:– রমজানের শেষ তারিখে গোনাহ মাফ হওয়া। শবে কুদর শ্রেষ্ঠ রাত হওয়াতে সাহাবারা তাই বুঝে ছিলেন অর্থাৎ- শবেকদরেই গোনাহ মাফ হয়ে যায় কিন্তু হুজুর (সঃ) বলেন শবেকদরের শ্রেষ্ঠত্ব আলাদা জিনিস, ক্ষমা রমজানের শেষ তারিখের পুরস্কার

রমজানের পরিচয়:রমজানের পরিচয়: রমজানের পরিচয়:রমজানের পরিচয়:রমজানের পরিচয়:রমজানের পরিচয়: রমজানের পরিচয়:রমজানের পরিচয়: রমজানের পরিচয়:রমজানের পরিচয়:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top